মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং নিরপেক্ষতা
এই পাঠে, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং নিরপেক্ষতার ধারণাগুলি সম্পর্কে শিখব। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য দেশের সাথে, বিশেষ করে যুদ্ধের সময় কীভাবে যোগাযোগ করেছিল তা গঠনে এই ধারণাগুলি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
বিচ্ছিন্নতাবাদ কি?
বিচ্ছিন্নতাবাদ এমন একটি নীতি যেখানে একটি দেশ অন্য দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক বিষয় থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে। এর অর্থ দেশটি জোট গঠন করে না বা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে না যা সরাসরি প্রভাবিত করে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বহু বছর ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদ অনুশীলন করেছে, বিশেষ করে 19 তম এবং 20 শতকের প্রথম দিকে।
কেন মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদ বেছে নিল?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিচ্ছিন্নতাবাদ বেছে নেওয়ার বিভিন্ন কারণ ছিল:
- ভূগোল: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ এবং এশিয়া থেকে অনেক দূরে, তাদের দ্বন্দ্ব থেকে দূরে থাকা সহজ করে তোলে।
- প্রতিষ্ঠার নীতি: জর্জ ওয়াশিংটনের মতো প্রতিষ্ঠাতাদের অনেকেই বিশ্বাস করতেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য দেশের সাথে জোট বাঁধা এড়ানো উচিত।
- গার্হস্থ্য ইস্যুতে ফোকাস করুন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশী যুদ্ধে জড়িত না হয়ে নিজের দেশ, অর্থনীতি এবং সমাজ গঠনে মনোযোগ দিতে চেয়েছিল।
মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদের উদাহরণ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদ অনুশীলন করেছিল তার কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া হল:
- মনরো মতবাদ (1823): রাষ্ট্রপতি জেমস মনরো ঘোষণা করেছিলেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না এবং ইউরোপ আমেরিকায় হস্তক্ষেপ করবে না।
- নিরপেক্ষতা আইন (1930s): যুদ্ধরত দেশগুলিতে অস্ত্র বিক্রি নিষিদ্ধ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশী যুদ্ধে জড়ানো থেকে বিরত রাখার জন্য এই আইনগুলি পাস করা হয়েছিল।
নিরপেক্ষতা কি?
নিরপেক্ষতা এমন একটি নীতি যেখানে একটি দেশ একটি সংঘাত বা যুদ্ধে পক্ষ নেয় না। এর অর্থ দেশটি যুদ্ধরত কোনো পক্ষকে সমর্থন করে না এবং নিরপেক্ষ থাকার চেষ্টা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায়ই দ্বন্দ্বে নিরপেক্ষতা ঘোষণা করে, বিশেষ করে 20 শতকের প্রথম দিকে।
কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষতা বেছে নিল?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষতা বেছে নেওয়ার বিভিন্ন কারণ ছিল:
- যুদ্ধ এড়ানো: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন যুদ্ধে জড়িত হওয়ার খরচ এবং বিপদ এড়াতে চেয়েছিল যা সরাসরি তার নিরাপত্তাকে হুমকি দেয় না।
- অর্থনৈতিক স্বার্থ: নিরপেক্ষ থাকার মাধ্যমে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি সংঘাতে সব পক্ষের সাথে বাণিজ্য করতে পারে, তার অর্থনীতিকে উপকৃত করতে পারে।
- জনমত: অনেক আমেরিকান বিদেশী যুদ্ধে জড়িত হতে চায়নি এবং নিরপেক্ষতা সমর্থন করেছিল।
মার্কিন নিরপেক্ষতার উদাহরণ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে নিরপেক্ষতা অনুশীলন করেছে তার কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া হল:
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধ: 1914 সালে যুদ্ধ শুরু হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষতা ঘোষণা করে এবং বেশ কয়েকটি উস্কানির পরে 1917 সালে সংঘাতে যোগ দেয়।
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রাথমিকভাবে নিরপেক্ষতা ঘোষণা করে যখন যুদ্ধ শুরু হয় 1939 সালে এবং শুধুমাত্র পার্ল হারবার আক্রমণের পর 1941 সালে সংঘাতে যোগ দেয়।
মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং নিরপেক্ষতার মূল পরিসংখ্যান
মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং নিরপেক্ষতা গঠনে বেশ কিছু মূল ব্যক্তিত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে:
- জর্জ ওয়াশিংটন: প্রথম মার্কিন রাষ্ট্রপতি যিনি তার বিদায়ী ভাষণে বিদেশী দেশগুলির সাথে স্থায়ী জোট গঠনের বিরুদ্ধে পরামর্শ দিয়েছিলেন।
- জেমস মনরো: পঞ্চম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি মনরো মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদের একটি মূল বক্তব্য।
- উড্রো উইলসন: ২৮তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিরপেক্ষ রেখেছিলেন কিন্তু পরে দেশটিকে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন।
- ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট: 32 তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি প্রথমদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিরপেক্ষতা সমর্থন করেছিলেন কিন্তু পরে পার্ল হারবারে হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন।
উল্লেখযোগ্য ঘটনা এবং সময়রেখা
এখানে মার্কিন বিচ্ছিন্নতা এবং নিরপেক্ষতার সাথে সম্পর্কিত কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা এবং সময়রেখা রয়েছে:
- 1823: মনরো মতবাদ ঘোষণা করা হয়, এই বলে যে মার্কিন ইউরোপীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না এবং এর বিপরীতে। 1914: প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষতা ঘোষণা করে।
- 1917: লুসিটানিয়া ডুবে যাওয়া সহ জার্মানির উসকানিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রবেশ করে।
- 1935-1937: বিদেশী যুদ্ধে মার্কিন যুক্ত হওয়া ঠেকাতে নিরপেক্ষতা আইন পাস করা হয়।
- 1939: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষতা ঘোষণা করে।
- 1941: পার্ল হারবারে জাপানি হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রবেশ করে।
মূল পয়েন্টের সারাংশ
এই পাঠে, আমরা মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং নিরপেক্ষতা সম্পর্কে শিখেছি। বিচ্ছিন্নতাবাদ হল অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক বিষয় থেকে দূরে থাকার নীতি, অন্যদিকে নিরপেক্ষতা হল একটি সংঘাতে পক্ষ না নেওয়ার নীতি। যুদ্ধ এড়াতে, অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলিতে মনোযোগ দিতে এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বহু বছর ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং নিরপেক্ষতার অনুশীলন করেছিল। জর্জ ওয়াশিংটন, জেমস মনরো, উড্রো উইলসন এবং ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এই নীতিগুলি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। মনরো মতবাদ, নিরপেক্ষতা আইন, এবং প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন জড়িত থাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলিও আলোচনা করা হয়েছিল।